হতাশা, মুড সুইং,রাগ থেকে পরিত্রাণের উপায়


 বর্তমান সময়ে তরুণ তরুণীদের মাঝে কয়েকটি সমস্যা ব্যাধি আকার ধারণ করেছে সেটি হচ্ছে হতাশা, মুড সুইং এবং হুটহাট রেগে যাওয়া, যার ফলে অনেককেই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে অনেক সহজ কাজ কঠিন হয়ে যাচ্ছে অনেক ছোট সমস্যা বড় আকার ধারণ করছে, 

এবং এটি এমন একটি সমস্যা যার কোন মেডিকেল সমাধান নেই, 

কিন্তু সমাধান আসলেই সম্ভব যদি সমস্যার উৎসটি নির্ণয় করা যায়,


এ বিষয়ে ইসলাম ধর্মের মতামত


মুমিন কখনো হতাশ বা নিরাশ হতে পারেন না। আল–কোরআনের সতর্কবাণী, ‘তারা (ফেরেশতারা) বলল, “আমরা আপনাকে সত্য সুসংবাদ দিচ্ছি; আপনি নৈরাশ্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না।” তিনি (ইব্রাহিম আ.) বললেন, “আপন প্রভুর রহমত থেকে কে নিরাশ হতে পারে পথভ্রষ্টরা ব্যতীত?’” (সুরা ১৫ হিজর, আয়াত: ৫৩-৫৬)।


হজরত ইয়াকুব (আ.) দীর্ঘ অপেক্ষার পরও আশাবাদী ছিলেন। সে আশার বাণী কোরআনে বিবৃত হয়েছে। তিনি তাঁর সন্তানদের বলেছেন, ‘হে আমার সন্তানেরা! তোমরা যাও, ইউসুফ ও তার ভাইয়ের সন্ধান করো। তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চিত জেনো, আল্লাহর রহমত থেকে তো অবিশ্বাসী কাফের ছাড়া অন্য কেউ নিরাশ হতে পারে না।’ (সুরা ১২ ইউসুফ, আয়াত: ৮৭)।


আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ সব পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (জুমার :৫৩) মূলত হতাশা ও নিরাশা হলো শয়তানের বৈশিষ্ট্য। শয়তানের এক নাম ইবলিশ, যার অর্থ হলো ‘নিরাশ’ বা ‘হতাশ’।


নবীজি (সা.) বলেন, ‘রাগ আসে শয়তানের পক্ষ থেকে; শয়তানকে তৈরি করা হয়েছে আগুন থেকে, আর একমাত্র পানির মাধ্যমেই আগুন নেভানো সম্ভব। তাই তোমাদের মধ্যে কেউ যখন রাগান্বিত হয়ে পড়ে, তার উচিত অজু করা।’ (আবু দাউদ)।


এক ব্যক্তি নবীজি (সা.)-কে বললেন, ‘আপনি আমাকে অসিয়ত করুন। তিনি বললেন, “তুমি রাগ করো না”। ওই ব্যক্তি কয়েকবার তা বললেন। নবীজি (সা.) প্রতিবারই বললেন, “রাগ করো না”।’ (বুখারি, খণ্ড: ৮, অধ্যায়: ৭৩, হাদিস: ১৩৭)।



অর্থাৎ এক কথায় রাগ, ক্রোধ, হিংসা, অযথা চিন্তা, পেরেশানি, হতাশা এগুলো শয়তানের প্ররোচনায় হয়,

এবং এগুলো শয়তানের বড় বড় হাতিয়ার।


হয়তোবা মনে প্রশ্ন জাগতে পারে শয়তান তো কখনো লাভের হিসাব ছাড়া কাজ করে না, তাইলে এখানে লাভ টা কোথায়।

হ্যাঁ লাভ আছে শয়তানের, কারন রাগ চিন্তা হতাশা এগুলোর দ্বারা বান্দার ইবাদাত থেকে মনোনিবেশ নষ্ট হয়, অনেক আমল বিনষ্ট হয়, হতাশার ফলে বান্দার সাথে আল্লাহর সম্পর্কে ফাটল ধরে, এটা অনেক বড় লাভ শয়তানের জন্য।


তো সমস্যার উৎপত্তি যদি এটাই হয় তাহলে সমাধান এখানেই,


আপনি হুট হাট রেগে যান??

সাথে সাথে অজুকরে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ুন, 


হঠাৎ মুড সুইং, সাথে সাথে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ুন,


হতাশায় ভুগছেন, পেরেশানি বেড়ে গেছে কোন কারণে, মনে অস্থিরতা কাজ করছে কিছুই ভালো লাগছে না, সহ্য করতে পারছেন না,

সাথে সাথে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ুন,

যদি এমন অবস্থায় থাকেন যে নামাজের নিষিদ্ধ সময় চলছে বা রাস্তায় আছেন, সময় সুযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই নামাজ আদায় করুন।



যতবার সমস্যায় পড়বেন ততবার নামাজে দাঁড়িয়ে যান, এতে আপনার তিনটা বেনিফিট, এসব থেকে মুক্তি পাচ্ছেন, সাথে নফল নামাজের সওয়াব এবং শয়তানি প্ররোচনা থেকে মুক্তির প্রচেষ্টার জন্য আল্লাহর নৈকট্য লাভ,


এবং আপনি বারবার যখন এ কাজ করবেন দেখবেন শয়তান আপনা আপনি আপনাকে একাজ থেকে দুরে রাখবে, 

কারন ওই একটাই, শয়তান কখনো লাভ ছাড়া লসের পথে এগোয় না, যখন আপনার একটা রাগের কারনে গোনাহ হচ্ছে সাথে সাথে দুই রাকাত নামাজ পড়ার মাধ্যমে তার থেকে মাফ পাচ্ছেন সাথে অতিরিক্ত সওয়াব, 

তো শয়তানের ব্যাবসায় লস, এরপর থেকে উল্টো শয়তান আপনার মাথা ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থা করবে।


সুতরাং এই আমলটি করতে থাকুন ইনশাআল্লাহ পরিত্রাণ পাবেন, তবে অবশ্যই আমলটি গুরুত্ব দিয়ে পালন করবেন, কারন গুরুত্ব কম দেওয়ার কারণে একবার যদি শয়তান ফাঁকফোকর পেয়ে যায় তাহলে আপনার আর এধরনের উপায়ই থাকবে না এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার।

Comments

Popular Posts